বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের ‘জেগে ওঠার ডাক’ দিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা ও বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে আগামী মঙ্গলবার ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার ধর্মতলার রাণী রাসমণি অ্যাভিনিউতে ৫০টি সনাতনী সংগঠনের ডাকে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এই ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। গোটা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং কারাবন্দী ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।শুভেন্দুর অভিযোগ, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখন হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিকার করতে এগিয়ে আসছে না। তিনি অন্তবর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে অনুরোধ জানান।
শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেন, আগামীকাল ৬ ডিসেম্বর রাজ্যজুড়ে পালন করা হবে ‘শৌর্য দিবস’। অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন স্মরণে এদিন কলকাতার শ্যামবাজার থেকে সিঁথির মোড় পর্যন্ত মিছিল বের করা হবে। আর ১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বিজেপি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত অবরোধ করবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গার ইসকন আশ্রমের অধ্যক্ষ কার্তিক মহারাজ। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তোলেন। তিনি আরও বলেন, হিন্দু নির্যাতন বন্ধ না হলে বৃহৎ আকারের আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
ঝাড়খন্ডে বিক্ষোভ
বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। আজ রাজ্যের ধানবাদ ও গুমলা শহরে বিক্ষোভ হয়। এতে হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা যোগ দেন।
বিক্ষোভে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি করা হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ‘নির্যাতন’ বন্ধের জন্য পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
ধানবাদে বিক্ষোভের আয়োজন করে হিন্দু রাষ্ট্রীয় সমন্বয় সমিতি (এইচআরএসএস)। এই বিক্ষোভে অংশ নেন ধানবাদের ইসকন, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), বজরঙ্গ দল ও অন্যান্য সংগঠনের সদস্যরা। এ সময় তাঁদের বাংলাদেশ সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে শোনা যায়।বিক্ষোভ সমাবেশে ধানবাদের আইনপ্রণেতা রাজ সিনহা বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নৃশংসতার বিষয়টি যাচাই করে দেখতে এবং মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার যেন হস্তক্ষেপ করে—আমি সে আহ্বান জানাচ্ছি।’
গুমলা শহরে ‘স্বর্ণ সনাতন ধর্ম’–এর ব্যানারে বিক্ষোভ হয়েছে। গুমলা ডেপুটি কমিশনারের মাধ্যমে তাঁরা ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রতি একটি স্মারকলিপিও দেন। বিক্ষোভকারীরা ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতিকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ দেওয়ার’ আহ্বান জানান।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী কলকাতায় আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন। ভারত, ৫ ডিসেম্বরছবি: ভাস্কর মুখার্জিNEWS
0 Comments